স্যার, আসতে পারি?
নোমান স্যার দেখলেন দরজায় একটা ছেলে। সে ক্র্যাচে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্যার বললেন, এসো।
ছেলেটা এগিয়ে এলো। বলল, আমার নাম রাশেদ। নতুন ভর্তি হয়েছি।
নোমান স্যার জানতেন রাশেদ আসবে। ভর্তির দিন তিনি রাশেদকে দেখেছিলেন। দুটি প্রশ্নও করেছিলেন তাকে। রাশেদ চটপট জবাব দিয়েছিল। স্যার বুঝেছিলেন ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী। ক্লাসের সবার সঙ্গে নোমান স্যার পরিচয় করিয়ে দিলেন। বললেন, ওর নাম রাশেদ। ও তোমাদের সঙ্গেই পড়বে।
ক্লাসে সেদিন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে কথা হচ্ছিল। কেউ অংশ নেবে দৌড় প্রতিযোগিতায়। কারো পছন্দ দড়ি লাফ। নোমান স্যার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কী করবে? রাশেদ বলল, অঙ্ক দৌড় ও মোরগ লড়াই করব। ক্লাসের সবাই ভাবছিল, রাশেদ পারবে তো! নোমান স্যার বললেন, খুব ভালো লাগল রাশেদ।
আজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে মাঠ। সবার মনে আনন্দ। খানিকটা উৎকণ্ঠা। কোন খেলায় কে বিজয়ী হবে!
শুরু হলো অঙ্ক দৌড়। সবার আগে অঙ্ক করে দৌড়ে আসতে হবে। যে আসতে পারবে, সে-ই হবে বিজয়ী। ক্র্যাচে ভর দিয়ে রাশেদ দৌড় শুরু করল। ও খুব তাড়াতাড়ি অঙ্ক করতে পারে।
৯৫ থেকে ৬৭ বিয়োগ করতে হবে। রাশেদ লিখল ২৮। লিখেই ক্র্যাচ নিয়ে দৌড় দিল। পিছনে তাকিয়ে দেখল, একজন এগিয়ে আসছে। ততক্ষণে রাশেদ চলে এসেছে শেষ সীমানায়। চারদিকে হইচই পড়ে গেল। রাশেদ জিতেছে।
এবার মোরগ লড়াইয়ের পালা। রাশেদ ক্র্যাচ দুটো রেখে দিল এক পাশে। দুই হাত পিছনে রেখে প্রস্তুতি নিল সে। বাঁশিতে ফুঁ দিতেই এগিয়ে গেল সামনে। মোরগ লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে আট জন।
শুরুতে রাশেদ কোনো আক্রমণ করল না। আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করল। লড়াই করতে করতে একে একে পড়ে গেল পাঁচ জন। বাকি রইল তিন জন রাশেদ, রাজু আর ঝিমিত। ওই সময়ে রাজু এগিয়ে এলো রাশেদের দিকে। রাশেদ চট করে সরে গেল। রাজু পড়ে গেল ঘাসের উপর। খেলার উত্তেজনায় সবাই হইচই করতে লাগল। বাকি রইল ঝিমিত আর রাশেদ। রাশেদ ভাবল ঠান্ডা মাথায় খেলতে হবে।
ঝিমিত এগিয়ে আসছে। লাফিয়ে লাফিয়ে রাশেদও এগিয়ে যাচ্ছে। মুখোমুখি হতেই কাঁধ দিয়ে জোরে আঘাত করল ঝিমিত। রাশেদ সরে গেল। খেলা জমে উঠেছে। মাইকে খেলার ধারাবর্ণনা করছেন নোমান স্যার।ঝিমিত আবারও আক্রমণ করল। রাশেদ কাঁধ দিয়ে নিজেকে প্রতিহত করল। কিন্তু কাঁপতে কাঁপতে প্রায় পড়েই যাচ্ছিল। মনোবল দৃঢ় করে সোজা হয়ে দাঁড়াল সে। হঠাৎ দেখল তীব্রবেগে এগিয়ে আসছে ঝিমিত। আক্রমণের ভঙ্গিতে রাশেদও এগিয়ে গেল। কাঁধ দিয়ে হালকা আঘাত করে পথ ছেড়ে দিল। ভারসাম্য রাখতে না পেরে হুড়মুড় করে পড়ে গেল ঝিমিত। বন্ধুরা সব চিৎকার করে উঠল, রাশেদ! রাশেদ!
বিকালে হেড স্যার বিজয়ীদের গলায় মেডেল পরিয়ে দিলেন। পুরস্কার হিসেবে হাতে তুলে দিলেন বই। তিনি বললেন, হারজিত বড়ো কথা নয়।
শব্দ শিখি'
ক্রীড়া - খেলা
চটপট – তাড়াতাড়ি
উৎকণ্ঠা - উদ্বেগ
তীব্রবেগে - দ্রুত গতিতে
দৃঢ় - শক্ত
শব্দ নিয়ে খালি জায়গায় বসাই
চটপট, মেধাবী, হইচই, মাঠ, প্রতিযোগিতা
স্যার বুঝেছিলেন ছেলেটা অত্যন্ত . . . . . . . … . . . . . . .
সেদিন ক্লাসে ক্রীড়া . . . . . . . … . . . . . . . নিয়ে কথা হচ্ছিল।
রঙিন কাগজ দিয়ে . . . . . . . … . . . . . . . সাজানো হয়েছে।
খেলার উত্তেজনায় সবাই . . . . . . . … . . . . . . . করতে লাগল।
বুঝে নিই
চটপট - খুব তাড়াতাড়ি কিছু করা।
হুড়মুড় – অনেক জিনিস একত্রে পড়ে যাবার শব্দ।
ক্র্যাচ – হাঁটার সমস্যায় ব্যবহার করা যায় এমন লাঠি।
ধারাবর্ণনা - কোনো কিছুর ধারাবাহিক বিবরণ।
মেডেল - বিজয়ীদের দেওয়া হয় এমন পদক।
বাক্য লিখি
চটপট . . . . . . . … . . . . . . . . . . . . . . … . . . . . . .
মেধাবী . . . . . . . … . . . . . . . . . . . . . . … . . . . . . .
হইচই . . . . . . . … . . . . . . . . . . . . . . … . . . . . . .
আঘাত . . . . . . . … . . . . . . . . . . . . . . … . . . . . . .
মেডেল . . . . . . . … . . . . . . . . . . . . . . … . . . . . . .
উত্তর বলি ও লিখি
নোমান স্যার কীভাবে বুঝলেন রাশেদ মেধাবী?
অঙ্ক দৌড় খেলার নিয়ম কী?
মোরগ লড়াইয়ে তৃতীয় হয়েছিল কে?
খেলা শেষে হেড স্যার কী বললেন?
সঠিক উত্তরটি বাছাই করি ও বলি
ক্র্যাচে ভর দিয়ে এগিয়ে এলো -
ক. জাফর খ. রাশেদ
গ. রাজু ঘ. ঝিমিত
রাশেদ যে যে খেলায় নাম দিয়েছিল -
ক. অঙ্ক দৌড় ও দীর্ঘ লাফ খ. দীর্ঘ লাফ ও মোরগ লড়াই
গ. মোরগ লড়াই ও দৌড় ঘ. অঙ্ক দৌড় ও মোরগ লড়াই
মাইকে খেলার ধারাবর্ণনা করছেন
ক. রাশেদ স্যার খ. জাফর স্যার
গ. নোমান স্যার ঘ. হেড স্যার
হেড স্যার বিজয়ীদের হাতে তুলে দিলেন -
ক. ক্রেস্ট খ. মেডেল
গ. মালা ঘ. বই
মোরগ লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিল -
ক. সাত জন খ. আট জন
গ. পাঁচ জন ঘ. নয় জন
ক্রমবাচক সংখ্যা বলি ও লিখি
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম।
শব্দের খেলা খেলি
খেলার নিয়ম: প্রথম জন একটা শব্দ বলবে। ধরা যাক, সে বলল 'বই'। দ্বিতীয় জন 'বই' শব্দটি বলবে এবং শব্দের শেষ বর্ণ দিয়ে আরেকটি শব্দ বলবে। সে বলবে - 'বই, ইট'।
তৃতীয় জন আগের দুটি শব্দ বলবে এবং দ্বিতীয় শব্দের শেষ বর্ণ দিয়ে আরেকটি শব্দ বলবে। সে বলবে- 'বই, ইট, টাকা'।
এভাবে চতুর্থ জন মোট চারটি শব্দ বলবে। এভাবে খেলা চলতে থাকবে। কেউ ধারাবাহিকভাবে বলতে না পারলে খেলা থেকে বাদ পড়বে। এভাবে একজন একজন করে বাদ পড়ার পর শেষ জন বিজয়ী হবে।
আরও দেখুন...